আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
113 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আসসালমুআলাইকুম ।

হুজুর আমার মনের মধ্যে খুব অশান্তি চলছে আমার ঘটনা টা পড়ার পর আমাকে এই অশান্তি থেকে বের হতে সাহায্য করুন।
আমি যখন ক্লাশ নবম শ্রেণী তে পড়তাম তখন আমার বয়স ১৩ কি ১৪ । হবে , আমর কিছু দুষ্টু বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে একদিন একটা বয়স্ক মহিলার কাছে যাই, আমি দেখি আমার বন্ধুরা কিসের একটা গুঁড়ো নিল , যে গুঁড়ো টা তার কল্পনার মেয়ের গায়ে ছিটিয়ে দিলে নাকি সেই মেয়েটা প্রেম করবে। এমনটা নাকি তিন বার করতে হবে । আমরা তখন একসঙ্গে স্কুল এ পড়তাম একসময় দেখলাম সত্যি সত্যি মেয়েটা ভালোবাসতে লেগেছিল আমার ওই বন্ধুটাকে।
এমন ঘটনার পর আমিও একদিন তাদের সঙ্গে যাই এবং সেই মহিলার দেওয়া গুড়ো নিয়ে আসি, বা আমাকে আমার বন্ধু দিয়েছিল এইরকম কিছু একটা হবে হয়ত, এবং আমিও একজন বন্ধু কে নিয়ে গিয়েছিলাম সেও চেষ্টা করে কিন্তু সফল হয়নি আমার বন্ধুর ইচ্ছাতে আমাকে জোর করেছিল তাই নিয়ে গিয়েছিলাম। মহিলাকে যে মেয়ের উদ্দেশে এমন টা করা হবে তার নাম এবং তার বাবার নাম বলতে হতো মনে হয়। এবং আমি একটা মেয়ের গা এ ছিটিয়ে দি, বা যে রাস্তা দিয়ে মেয়ে টা পায়ে হেঁটে যেতো সেই রাস্তায় ছিটিয়ে দিয়ে এসেছিলাম । বিষয় হলো এমন হওয়ার পর কখনো মনে হয়নি যে সেই গুঁড়ো কাজ করেছে, বা মেয়ে টা আমাকে ভালোবেসেছে, আমি তো মেয়েটার পিছুনে এমনিতেই ঘুরতাম , হটাৎ একদিন মেয়েটা আমাকে বলে সে আমাকে ভালোবাসে। আমিও খুব সিরিয়াস ছিলাম আমিও ভালবাসতাম হটাৎ মেয়েটা আমাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য একটা ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক করে, আমি তার পিছনে পাগলের মত ঘুরতে থাকি , আস্তে আস্তে সব ভুলে গিয়ে আমি মেডিক্যাল এর জন্য পড়াশোনার করতে বাইরে গেলাম প্রায় ২ বছর হয়ে গেল। তার পর আর যোগাযোগ নেই, এমন হতে হতে মেয়ে তার বিয়ে হয়ে যায় , দিয়ে পারিবারিক কারণে ডিভোর্স হয়। দিয়ে মেয়ে টা অন্য একটা ছেলের সাতে আবার সম্পর্ক করে এবং আমার সাতেও কথা বলার চেষ্টা করে, তখন আমার সাতে কথা হয় আমি তাকে ভালোবেসে বিয়ে করতে চাই, সে চাইনি অন্য ছেলের সাতে সম্পর্ক করে বিয়ে করে অনেক দিন হলো এখন সংসার করছে। এবং আমার বন্ধু যে মেয়ের জন্য করেছিল সে একজন বর্তমানে নার্স। সে মেয়ে টা 2 টো বিয়ে করে। প্রথম বিয়ে করে পারিবারিক কারণে ভেঙে যাই , তারপর আবার বিয়ে করে , বিয়ে করার পর অন্য একটা ছেলের সঙ্গে প্রেম করে। যেহেতু প্রেম অন্য একটা ছেলের সঙ্গে করতো স্বামী জেনে যায় অশান্তি হয় এমনি কি অনেক ছেলের সঙ্গে প্রেম করতো। জানিনা এখন সেই স্বামীর সঙ্গে আছে কি অন্য বিয়ে করেছে।

হুজুর বিষয় হলো আমার এত বুঝ ছিল না তখন , আমি অনেকদিন আগে তওবা করেছি ভুল স্বীকার করেছি , হুজুর আমার এখন বিয়ে হয়েছে সংসার হয়েছে,
১.হুজুর এক্ষেত্রে কি আমার এই গুনহা মাফ হবে আখেরাতে মাফ পাবো যদি আমি আবারও তৌবা করি। ?

২.যেহেতু মেয়ে টা তো আমাকে ছেড়েছে, তাহলে তো যে উদ্দেশ্যে নিয়ে কাজ করা হয়েছিল তা তো হয়নি তাহলে কি সেই মেয়ের কাছে মাফ চাইতে হবে, এমনি তে তার কাছে অন্য কারণে ক্ষমা চেয়েছি যে তোমাকে বিরক্ত করার জন্য মাফ করো বলেছি। এই বিষয়ের জন্য কিছু বলিনি। হুজুর আমি কি মাফ পাবো?
৩. আমার বন্ধুর ও একই অবস্থা কোনো কাজই হয়নি , যেহেতু আমি নিয়ে গিয়েছিলাম , অবশ্য সে আমাকে বলেছিল , ৯ বছর আগের ঘটনা। বন্ধু ধর্মে হিন্দু ছিল।

আমার বন্ধুকে নিয়ে গিয়েছিলাম এই পাপ কি আমার মাফ হবে না ?
হুজুর আমি খাস দিলে অনেক দিন আগে তওবা করেছি , আজ একটা প্রশ্ন দেখে মনে পড়লো তাই আলাগোচা ভাবে প্রশ্ন করছি ।

আমি কি মাফ পাবনা ?
৪. আমি কি কাফের হয়ে গিয়েছি , আমার ঈমান সব কিছু কি নষ্ট হয়ে গিয়েছে ??

আমার ভেতর একদম পুড়ছে আমি ভয় এ শেষ হয়ে যাচ্ছি। আমার সমস্ত ঘটনা পড়ে , আমি তৌবা করলে আখেরাতে মাফ পাবো ?, ঈমান ফিরে পাবো?

দয়া করে সমস্ত ঘটনা পড়বেন, যখন ঘটনা ঘটে সত্যি আমার ইসলামিক বুদ্ধি ছিলনা, আমি ভুল করেছি আখন আমি তৌবা করে ফিরে আসতে চাই।

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}

عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ»

হযরত ইবাদা বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী গোনাহ করে নাই ব্যক্তির মত হয়ে যায়। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৫০] 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
খাঁটিভাবে তাওবা করলে আল্লাহ্ তাআলা অতীতের ছোট বড় সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। তবে বান্দার কোন হক নষ্ট করে থাকলে তাওবার পাশাপাশি তাকে তার হক তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া জরুরী।

 তওবা তিনটি জিনিসের সমন্বয়-
(বান্দার হক থাকলে আগে সেটি আদায় করে আসতে হবে,বা তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে আসতে হবে।)

এক. পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া। আর অপরের হক নষ্ট করলে তা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া।

দুই. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা।

তিন. আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।

আরো জানুনঃ 
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
আপনি যদি খালেস দিলে লজ্জিত অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে তওবা করেন,তাহলে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে মাফ করবেন।

(০২)
তার কাছে আর মাফ চাইতে হবেনা।
আল্লাহর কাছে মাফ চাইবেন।
আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন।

(০৩)
আপনি যেহেতু তওবা করেছেন,সুতরাং আপনি মাফ পাবেন।
চিন্তিত হবেননা।

(০৪)
আপনি কাফের হয়ে যাননি , আপনার ঈমান আমল কোনো কিছুই নষ্ট হয়ে যায়নি।

আপনি তওবার পর টেনশন মুক্ত থাকুন।
পেরেশান হবেননা।
কোনো সমস্যা হবেনা,ইনশাআল্লাহ। 
হতাশ হবেননা।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 
قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِہِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّہٗ ہُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ ﴿۵۳﴾ 

বলুন, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ; আল্লাহ্র অনুগ্রহ থেকে হতাশ হয়ো না, নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(সুরা আয যুমার ৫৩)

সুতরাং আপনি মনে সাহস রাখুন,অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন।

আপনি পূর্ণ ভাবে দ্বীনের পথে চলার চেষ্টা করুন।
দোয়া করছি,আল্লাহ তায়ালা আপনাকে যেনো দ্বীনের জন্য কবুল করে,আমিন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...