আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
58 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (23 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১) রামাদানের অনেক ১২ রোজা কাজা আছে আমার, শধু একটা রেখেছি শাওয়াল এর পর। এখন আমি জিলহজ্জ এর ৯ টি রোজা করতে চাচ্ছি ইন শা আল্লাহ,এখন এই ৯ টি রোজা যদি আমি রামাদানের কাজা রোজার নিয়তে করি তাহলে কি জিলহজ্জ মাসের রোজার পরিপূর্ণ সাওয়াব পাবো? বা এইভাবে কি কাযার নিয়্যাত করে রোজা রাখা যাবে, আর যদি যায় ও তাহলে আরাফার দিনের নিয়্যাত কেমন হবে?
২) কোন বিধর্মী অসুস্থ হলে যেমন শিক্ষক হলে অনেকে অসুস্থতার কথা শুনে বলে আল্লাহ সুস্থ করে দিক বা অনেকে আছে যে আল্লাহর কাছে দুয়া পর্যন্ত করে এইটা কি জায়েজ?

৩) আমল সালেহ কি? এবং কোন আমল গুলোকে আমিলে সলেহ বলে?কিভাবে আমলে সলেহ করা যায়?

৪) কুরআনে আল্লাহ পাক বিভিন্ন জায়গায় সৎকর্ম করার ব্যপারে  বলেছেন? সেই সৎকর্ম গুলা কি বা কি ধরনের হতে পারে?

জাযাকিল্লাহু খাইর,দু:খিত বেশি প্রশ্ন করার জন্য অনেক বেশি আফওয়ান।

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
https://www.ifatwa.info/17861/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
ফরজ রোজা কাযা হলে তা পরবর্তীতে আদায় করে নেয়াও ফরজ। কারণ পবিত্র কুরআনে কাযা রোযা রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

شَہۡرُ رَمَضَانَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ فِیۡہِ الۡقُرۡاٰنُ ہُدًی لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الۡہُدٰی وَ الۡفُرۡقَانِ ۚ فَمَنۡ شَہِدَ مِنۡکُمُ الشَّہۡرَ فَلۡیَصُمۡہُ ؕ وَ مَنۡ کَانَ مَرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیۡدُ اللّٰہُ بِکُمُ الۡیُسۡرَ وَ لَا یُرِیۡدُ بِکُمُ الۡعُسۡرَ ۫ وَ لِتُکۡمِلُوا الۡعِدَّۃَ وَ لِتُکَبِّرُوا اللّٰہَ عَلٰی مَا ہَدٰىکُمۡ وَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۱۸۵﴾

রমাদান মাস, এতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হেদায়াতের জন্য এবং হিদায়তের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে। তবে তোমাদের কেউ অসুস্থ থাকলে বা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ চান এবং তোমাদের জন্য কষ্ট চান না। আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূর্ণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন সে জন্য তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।

আর আপনি যেই রোজার কথা বলেছেন তা নফল। নফলের তুলনায় ফরজের গুরুত্ব অনেক কম।

ফরজ আদায় না করলে এর শাস্তি পেতে হবে,মহান আল্লাহর কাছে কঠিন জবাবদিহি তার সম্মুখীন হতে হবে।

আর নফল আদায় না করলে কোনো সমস্যাই নেই।
এর জন্য কোনো জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবেনা।

এ নফল রোযা রাখার  দিনগুলোতে আগের কাযা রোযা রাখলে কাযা আদায়ের সাথে সাথে নফলের সওয়াব হবে কি না?
,
রোযা রাখবে ফরজের কাযার। তাই শুধু কাযা রোযাই আদায় হবে। নফল রোযার সওয়াব হবে না। {ফাতাওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ-৬/৩০৬}

وَمَتَى نَوَى شَيْئَيْنِ مُخْتَلِفَيْنِ مُتَسَاوِيَيْنِ فِي الْوَكَادَةِ وَالْفَرِيضَةِ، وَلَا رُجْحَانَ لِأَحَدِهِمَا عَلَى الْآخَرِ بَطَلَا، وَمَتَى تَرَجَّحَ أَحَدُهُمَا عَلَى الْآخَرِ ثَبَتَ الرَّاجِحُ كَذَا فِي مُحِيطِ السَّرَخْسِيِّ.الخ وَإِذَا نَوَى قَضَاءَ بَعْضِ رَمَضَانَ، وَالتَّطَوُّعُ يَقَعُ عَنْ رَمَضَانَ فِي قَوْلِ أَبِي يُوسُفَ – رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى -، وَهُوَ رِوَايَةٌ عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ – رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى – كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ.
 (الفتاوى الهندية، كِتَابُ الصَّوْمِ وَفِيهِ سَبْعَةُ أَبْوَابٍ، الْبَابُ الْأَوَّلُ فِي تَعْرِيفِهِ وَتَقْسِيمِهِ وَسَبَبِهِ وَوَقْتِهِ وَشَرْطِهِ-1/196-197
সারমর্মঃ 
যদি দুটি আলাদা প্রকারের রোযা রাখার নিয়ত করে,তাহলে উভয় রোযাই বাতিল হবে,,,,,,,।
যদি রমজানের কাজা রোযার নিয়ত করে,সাথে সাথে নফল রোযারও নিয়ত করে,তাহলে আবু হানিফা রহঃ এর এক মত অনুযায়ী রমজানের রোযাই আদায় হবে।  
,
আপনি জিলহজ্জ এর ০৯ নফল রোযার সাথে কাজা রোযার নিয়ত করতে পারবেননা।

কাজা রোযা হলে শুধু কাজা রোযারই নিয়ত করবেন,আর নফল রোযা রাখতে চাইলে শুধু নফল রোযারই নিয়ত করবেন।

পরামর্শ থাকবে, আপনি শুধু রমজানের কাজা রোযারই নিয়ত করবেন। 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এখন এই ৯ টি রোজা যদি আপনি রামাদানের কাজা রোজার নিয়তে করেন, তাহলে জিলহজ্জ মাসের রোজার পরিপূর্ণ সাওয়াব পাবেননা।

(০২)
হাদিস শরিফে এসেছে, আনাস রাযি. বলেন,

كان للنبيﷺ غلام يهودي يخدمه ، فَمَرِضَ ، فَأَتَاهُ النَّبِيُّ ﷺ يَعُودُهُ فَقَعَدَ عِنْدَ رَأْسِهِ فَقَالَ لَهُ أَسْلِمْ فَنَظَرَ إِلَى أَبِيهِ وَهُوَ عِنْدَهُ فَقَالَ لَهُ أَطِعْ أَبَا الْقَاسِمِ ﷺ فَأَسْلَمَ فَخَرَجَ النَّبِيُّ ﷺوَهُوَ يَقُولُ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَنْقَذَهُ مِنْ النَّارِ

এক ইয়াহূদী বালক, নবী ﷺ– –এর খিদমত করত, সে একবার অসুস্থ হয়ে পড়লে নবী ﷺ তাকে দেখার জন্য আসলেন। তিনি তার মাথার কাছে বসে তাকে বললেন, তুমি ইসলাম গ্রহণ কর, সে তখন তার পিতার দিকে তাকাল, সে তার কাছেই ছিল, পিতা তাকে বলল, আবূল কাসিম (নবী ﷺ–এর কুনিয়াত) এর কথা মেনে নাও, তখন সে ইসলাম গ্রহণ করল। নবী ﷺ সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় বলেছিলেন, যাবতীয় প্রশংসা সে আল্লাহর, যিনি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিলেন। (বুখারি ১২৭৩ জানাযা অধ্যায়)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
অমুসলিম অসুস্থ হলে এভাবে আল্লাহর কাছে দোয়া করা যাবে,এক্ষেত্রে মনে তার হেদায়াতের নিয়ত রাখবেন।

(০৩)
আমলে সালেহ মানে নেক আমল।
প্রত্যেক নেক আমলকেই আমলে সালেহ বলে। 

আমলে ছালেহ আল্লাহর ভালবাসা ও সন্তুষ্টি লাভের উপায়।

মুমিনজীবনের প্রতিটি কর্মই আমলে সালেহ, যদি সেটা দুটি শর্ত মোতাবেক হয়।
১. বিশুদ্ধ নিয়ত ও ২. সুন্নাহর অনুসরণ। 

যদি আমাদের প্রতিটি কাজ-কর্ম শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে হয়, আর কাজটা নবিজির সুন্নাহ অনুযায়ী হয়, তাহলে আমাদের প্রতিটি কাজই হবে আমলে সালেহ। তাসবিহ, তাহলিল, তাহমিদ এসব যেমন সাওয়াবের কাজ, আমলে সালেহ, ঠিক তেমনি লেনদেন, ব্যবসা-বাণিজ্য, সামাজিক ও মানবিক যেকোন কাজ, এমনকি হালাল উপায়ে স্ত্রীর সাথে মিলিত হওয়াটা কিংবা স্ত্রীর মুখে পরম ভালোবাসায় খাবার তুলে দেয়াটাও আমলে সালেহ।

(০৪)
এটি ব্যাপক বাক্য।
এ থেকে যেকোনো নেক কাজ উদ্দেশ্য। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 158 views
0 votes
1 answer 89 views
...