আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
95 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

আমি একাউন্টিং ডিপার্টমেন্ট থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি আলহামদুলিল্লাহ। রেজাল্ট বরাবর ভালো ছিলো আলহামদুলিল্লাহ। পরিবারের +আমার নিজের ও ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিলো।
খুব অল্পকিছুদিন আমি একটা ইসলামি  ব্যাংকে ইন্টার্নশীপ করেছিলাম।যথেষ্ট সম্মানের সাথেই সেখানে কাজ করেছিলাম।কিন্তু তখনকার কিছু বিব্রতকর সিচুয়েশনের জন্য জবের ইচ্ছাটা তখনই চলে গিয়েছিলো। এরপর দ্বীন সম্পর্কে যখন বুঝলাম তখন মাস্টার্স ফাইনাল দিলাম।কিন্তু দুনিয়াবি অনেক কিছু অর্জন করতে হবে এই ব্যাপারটা আমার মধ্যে কাজ করেনা।


অনলাইনে একটা প্রতিষ্ঠানে পড়ছি।এবং অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের খেদমতে আছি আলহামদুলিল্লাহ। আমার এটাই ভালো লাগে।সারাদিনের তৃপ্তি পাই এখানেই।বাসায় এরাবিক পড়ার পারমিশন নেই।তাই লুকিয়েই করতে হয় সবকিছু। যেটা নিয়ে খুব মানসিক চাপে পরে যাই।

দ্বিনে ফেরার পর এখন পর্দা মেইনটেইন করার চেষ্টা করছি খুব।এসব কারণে পাত্র পক্ষ আগায়না।আব্বু আম্মু অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে টেনশনে। মাঝেমধ্যে আম্মু কান্না করে এত্ত লেখাপড়া করে কি করছি।তখন খুব খারাপ লাগে।আমার খুব ইচ্ছে ছিল কুরআন রিলেটেড লেখপড়া করবো।আমার ভালো লাগে পড়তে।কিন্তু যেহেতু জব করবো না তাই পড়াটাও পছন্দ করে না কেউ।


ইদানীং একটা হাদিস খুব মাথায় ঘুরছে।তোমরা দ্বীনকে নিজের উপর চাপিয়ে দিওনা।নয়তো দ্বীন তোমাদের উপর চেপে বসবে।

এজন্য আরো বেশি মানিসিক চাপে পরে গিয়েছি।এ বিষয়ে আমি অনেক লেকচার খুঁজেছি।কিন্তু পাইনি।তাই এখানে লিখতে বসলাম। আমাকে একটু দ্রুত পরামর্শ দিন প্লিজ...

আমি কি আমার পরিবারের হক নষ্ট করছি?শয়তানের ওয়াসাওয়াসায় পআরছি কি?দ্বীনে ফেরার পর মেয়েদের কি কি করণীয় একটু জানাবেন ইনশাআল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


দ্বীনের পথে ফেরার পর করনীয় সম্পর্কে প্রথমেই কিছু পরামর্শঃ-
আপনাকে সৎ ও নেককার লোকদের সাথে উঠাবসা করার চেষ্টা করতে হবে।
এজন্য দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতের সাথে সম্পৃক্ত নারীদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
মাহরাম সহ মাস্তুরাত জামাতে যেতে পারেন।

তাদের কাছে গিয়ে তা'লিমে অংশগ্রহণ করবেন।
চেহারা,হাত,পা ঢাকা সহ পূর্ণ পর্দা করবেন।
গায়রে মাহরাম মেইনটেইন করবেন।
গায়রে মাহরামদের সাথে কথা বলতে করবেননা।
বিশেষ প্রয়োজনে কথা বলতে হলে পূর্ণ পর্দায় থেকে প্রয়োজনীয় কথা বলবেন,অপ্রয়োজনীয় কথা বলা যাবেনা।

মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন সাহেব দাঃবাঃ লিখিত "আহকামে জিন্দেগী" "আহকামে নিসা" বই পড়ে জীবন চালাবেন।
তাহলেই পূর্ণ দ্বীনের উপর চলা আপনার জন্য সহজ হবে। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
নিম্নোক্ত দোয়া বেশি বেশি পড়বেনঃ-

আনাস রাযি. বলেন, রাসুল ﷺ (উম্মতকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য) সব সময় এই দোয়া করতেন, 

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلىٰ دِيْنِكَ 

হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তর আপনার দীনের উপর দৃঢ় করে দিন।

আনাস রাযি. বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আপনার উপর এবং আপনার আনিত শিক্ষার উপর ঈমান এনেছি। এখন আপনার মনে কি আমাদের সম্পর্কে কোনো সন্দেহ আছে? ( যে বেশি বেশি এই দোয়া করেন!) রাসুল ﷺ উত্তর দিলেন হ্যাঁ! সব অন্তর আল্লাহর দুই আঙ্গুলের মধ্যে পড়ে আছে। আল্লাহ যেভাবে চান, এগুলোকে পরিবর্তন করেন। (তিরমিযি ২১৪০ তাকদির অধ্যায়)

★আপনি আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করবেন।

রাসূলুল্লাহ্ ﷺ দোয়া করতেন,

اللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا، وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَن زَكَّاهَا، أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلَاهَا

হে আল্লাহ আমাকে তাকওয়ার তওফীক দান করুন এবং নাফসকে পবিত্র করুন, আপনিই তো উত্তম পবিত্রকারী। আর আপনিই আমার নাফসের মুরুব্বী ও পৃষ্ঠপোষক। (মুসলিম ২৭২২)
সুতরাং আপনিও দোয়াটি করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

নেককারদের সোহবত গ্রহণ করুন। তাদের সাথে বেশি উঠাবসা করুন।

এতে নফস নিয়ন্ত্রণ করা এবং তাওবার উপর অটল থাকা আপনার জন্য সহজ হবে। 

 আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)

অধিকহারে ইস্তেগফার করুন। প্রয়োজনে এর জন্য প্রত্যেক নামাজের পর একটা নিয়ম করে নিন। যেমন, প্রত্যেক নামাজের পর ৫০/১০০/২০০ বার أسْتَغْفِرُ اللهَ   অথবা أسْتَغْفِرُ اللهَ وَأتُوبُ إلَيهِ অথবা  اللَّهُمَّ اغْفِرْ لي পড়ার নিয়ম করে নিতে পারেন। 

★কখনো একাকী নিভৃতে থাকবেন না। কেননা একাকীত্ব গোনাহ চিন্তা করার কারণ হতে পারে। আপনার সময়কে উপকারী বিষয়ে ব্যয় করতে সচেষ্ট হোন। ঈমান ও ইসলামের পরিবেশে সময় ব্যয় করুন।

আপনাকে বেশি পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করার ও শোনার পরামর্শ দিচ্ছি। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا

আর যখন তাদের সামনে পাঠ করা হয় কালাম, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায়। (সূরা আনফাল ২)

অনুরূপভাবে আমরা আপনাকে বুঝে বুঝে নবীদের কাহিনী, সাহাবায়ে কেরামের জীবনী পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি। 

★অধিকহারে আল্লাহর যিকির করুন। কেননা, দুর্বল ঈমানের সুস্থতার জন্য যিকির খুবই উপকারী। আল্লাহর যিকির অন্তরে ঈমানের বীজ বপন করে। মুমিনের অন্তর যিকিরের মাধ্যমে প্রশান্ত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। (সূরা রা’দ ২৮)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
"তোমরা দ্বীনকে নিজের উপর চাপিয়ে দিওনা।নয়তো দ্বীন তোমাদের উপর চেপে বসবে"

এমন কোনো কথা হাদীসে খুজে পাইনি। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি পরিপূর্ণ দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন,শরীয়তের যাবতীয় আহকাম মেনে চলবেন, গায়রে মাহরাম মেইনটেইন করে চলবেন,পাশাপাশি আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন।

দ্বীনদার পাত্রের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন,সেরকম পাত্র পাওয়ার জন্য অভিভাবকদের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া জন্য বলবেন।

যথাযথ চেষ্টা করলে ইনশাআল্লাহ সমাধান মিলবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...