আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
229 views
in সালাত(Prayer) by (14 points)
নামাজের মধ্যে সুরা গুলা কি কুরআন যে ভাবে পরি সেভাবে পড়তে হবে নাকি মাদ কম বেশি হলে নামাজ হয়ে যাবে
চার আলিফ মাদ কি চার আলিফ এ পড়তে হবে।
খিযির ( আঃ) নাকি বেঁচে আছে এ বিষয় এ একটু বলবেন প্লিজ

শুনেছিলাম উনি নাকি কি একটা পান করেছিলো এইজন্য উনি অমর হয়ে গেছে


ইসা আঃ যখন আসবে তখন খিস্ট্রান রা মুসলমান হবে কি
কারন তারা তো ইসা আঃ কে রব ভাবে
তারা কি তখন মেনে নিবে

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/4350 নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে,

নামাযের কেরাতে যদি তাজবীদে ভূল হয়,যাকে লাহলে খাফী বলা হয়,তাহলে উক্ত নামাযকে দোহড়ানের প্রয়োজন নেই।তাজবীদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1126

তবে যদি নামাযে এমন কোনো ভূল হয়,যার কারণে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়,(এক্ষেত্রে তাজবীদ বিভাগের লাহনে জালী গ্রহণযোগ্য নয়,কেননা তাজবীদের পরিভাষায় এক হরফের স্থলে অন্য হরফ পড়ে নিলেই লাহনে জলী হয়ে যায়,চায় নিকটবর্তী মাখরাজ হোক বা দূরবর্তী মাখরাজ হোক,চায় অর্থ সঠিক থাকুক বা নাই থাকুক)কিন্তু ফুকাহায়ে কেরাম দূরবর্তী মাখরাজের উচ্ছারণের সময়ে এবং অর্থ বিগড়ে যাওয়ার সময়ে নামাযকে ফাসিদ হওয়ার ফাতাওয়া দিয়ে থাকেন।

সুতরাং নামাযে কোনো হরফ উচ্ছারণের সময়ে,সেই হরফের স্থলে তার দূরবর্তী মাখরাজের কোনো হরফ উচ্ছারিত হয়ে গেলে,এবং অর্থ বিগড়ে গেলে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।

**পবিত্র কোরআনের ইতিহাস রচনার মূলনীতি হলো, কোনো ঘটনার ঠিক ততখানি উল্লেখ করা হয়ে থাকে যতখানি হেদায়েতের পথপরিক্রমায় প্রয়োজন। ইতিহাসের চুলচেরা বিশ্লেষণ কোরআনের উদ্দেশ্য নয়। এই মূলনীতির আলোকে খিজির (আ.)-এর ব্যক্তিপরিচিতি সম্পর্কেও সামান্য কিছু তথ্য কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর সম্পর্কে এর বেশি কিছু জানা কঠিনতম ব্যাপার। তাই তাঁকে নিয়ে নানা মিথ ও মুখরোচক ঘটনা জন্ম নিয়েছে। তাঁকে নিয়ে সবচেয়ে বড় বিতর্ক হলো, তিনি কি এখনো জীবিত আছেন? তিনি কি কিয়ামত পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন? এ প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে তাফসিরবিদ, হাদিসবিদ ও ইতিহাসবিদরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছেন। সুফি ভাবধারায় বিশ্বাসী সবাই মনে করেন, খিজির (আ.) এখনো জীবিত এবং তিনি কিয়ামত পর্যন্ত জীবিত থাকবেন। বহু প্রখ্যাত ব্যক্তিও এ তত্ত্বে বিশ্বাস করেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ইবনে কাসির (রহ.), ইমাম নববী (রহ.) ও ইবনুস সালাহ (রহ.)-এর মতো জগদ্বিখ্যাত মুসলিম মনীষীরা। আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) লিখেছেন, ‘সবাই এ বিষয়ে একমত যে খিজির (আ.) এখনো জীবিত আছেন। ’ [আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ২৪৫ (আরবি, দারু আলামিল কুতুব, ২০০৩)]

ইমাম নববী (রহ.) লিখেছেন, ‘সব আলেম এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে খিজির (আ.) জীবিত। এবং তিনি আমাদের সামনে বিদ্যমান। আর সুফিদের সবাই এ মতবাদে বিশ্বাসী। ’ [শারহুন নববী, বাবুন মিন ফাদ্বাইলিল খিদ্বির, পৃষ্ঠা ৫১৯ (আরবি, দারুল খাইর, ১৯৯৬)]

ইবনে সালাহ (রহ.) লিখেছেন, ‘আলেম ও পুণ্যবান সবার বিশ্বাস হলো খিজির (আ.) জীবিত। ’ (শারহুন নববী, প্রাগুক্ত)

খিজির (আ.) সম্পর্কে এমন ধারণা পোষণ করার কারণ কী? এর জবাবে ইবনে হাজর আসকালানি (রহ.) লিখেছেন, ‘ইতিহাসবিদরা এর দুটি কারণ উল্লেখ করেছেন। এক. কথিত আছে যে আদম (আ.) তুফান থেকে বের হওয়ার পর মৃত্যুবরণ করলে খিজির (আ.) তাঁকে দাফন করেন। তখন তিনি খিজির (আ.)-এর জন্য এ মর্মে দোয়া করেছেন, যেন খিজির (আ.) আদম (আ.)-এর মতো হায়াত লাভ করেন। এ দোয়ার বরকতে তিনি দীর্ঘ হায়াত পেয়েছেন। তবে এ ঘটনার সপক্ষে অকাট্য বা বিশ্বাসযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।

দুই. খিজির (আ.) সম্পর্কে আরো কথিত আছে যে তিনি জুলকারনাইন বাদশাহর সঙ্গে ‘আবে হায়াত’-এর সন্ধান পেয়েছেন। এবং সৌভাগ্যবশত তিনি সেই আবে হায়াত তথা অমরত্বের অমীয় সুধা পান করে ধন্য হয়েছেন। (ইবনে হাজার আসকালানি, ‘আয যাহরুন নাদ্বার ফি হালির খাদ্বার’, পৃষ্ঠা ২৬)

এই ‘আবে হায়াত’-এর ঘটনাটি ইতিহাসবিদ ইবনুল আসির (রহ.) তাঁর ‘আল কামিল ফিত তারিখ’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। তাঁর সূত্রে আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’র তৃতীয় খণ্ডে ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন। উভয় ঘটনার বর্ণনাসূত্রে রয়েছেন আবু জাফর আল বাকির ও তাঁর পিতা জাইনুল আবেদিন (রহ.)। তাঁরা উভয়ে শিয়া মতবাদের বিভিন্ন উক্তির প্রসিদ্ধ বর্ণনাকারী।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. তাজবীদের আলোকে বলা হয় তেলাওয়াত করার সময় যেখানে যতটুকু মাদ আছে সেখানে ততটুকুই টেনে পড়াই শ্রেয়। যদি কেউ চার আলিফের জায়গায় তিন আলিফ টেনে পড়ে তাহলে তার সালাত হয়ে যাবে। কারণ, মাদের সামান্য কম বেশী হওয়ার ফলে অর্থ বিকৃত হয় না। তবে ইচ্ছাকৃত এমনটি করা মোটেও উচিত নয়।

২. খিযির আ. অলি না নবী; এব্যপারে ওলামায়ে কেরামের মাঝে মতপার্থক্য আছে। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মত হল, তিনি নবী ছিলেন। হযরত খিজির আঃ সম্পর্কে জানা কোন জরুরী বিষয় নয়। এসব বিষয় সম্পর্কে অতিরিক্ত খুঁজাখুঁজি করা নিষ্প্রয়োজন। তার সম্পর্কে অনেক  কথাই প্রচলিত আছে। বাকি বিশুদ্ধতম কথা হল, তিনি একজন নবী ছিলেন।

৩. আল্লাহ তায়ালা প্রকাশ করে দেন, ঈসা (আ.) নিহত হননি; বরং তাকে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে এবং ইহুদিদের ধাঁধায় ফেলা হয়েছে। মহাগ্রন্থ কোরআনে রয়েছে, ‘বরং আল্লাহ তার কাছে তাকে তুলে নিয়েছেন এবং আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী। তাদের (এ) কথার কারণে, আমরা আল্লাহর রাসুল মারিয়াম পুত্র ঈসা মাসিহকে হত্যা করেছি। অথচ তারা তাকে হত্যা করেনি এবং তাকে শূলেও চড়ায়নি; বরং তাদের ধাঁধায় ফেলা হয়েছিল। আর নিশ্চয় যারা তাতে মতবিরোধ করেছিল, অবশ্যই তারা তার ব্যাপারে সন্দেহের মধ্যে ছিল। ধারণার অনুসরণ ছাড়া এ ব্যাপারে তাদের কোনো জ্ঞান নেই। আর এটা নিশ্চিত, তারা তাকে হত্যা করেনি।’ (সুরা নিসা : ১৫৭-১৫৮)।

বর্তমানে ইহুদি-খ্রিস্টান উভয় দল ভুলের শিকার। ইহুদিরা গর্ব করে বলে, আমরা ঈসা (আ.)-কে হত্যা করে ক্রুশবিদ্ধ করেছি। আর খ্রিস্টানরা মনে করে, ঈসা (আ.) ক্রুশবিদ্ধ হয়ে নিজের উম্মতের গুনাহের কাফফারা আদায় করেছেন। অথচ ঈসা (আ.) আসমানে জীবিত আছেন। কেয়ামতের আগে দাজ্জাল বের হলে তিনি পৃথিবীতে অবতরণ করবেন এবং তাকে হত্যা করবেন। সে সময় ইহুদি-খ্রিস্টান সবার দৃঢ় বিশ্বাস হয়ে যাবে যে, নবী ঈসা (আ.)-কে হত্যাও করা হয়নি, শূলিতেও চড়ানো হয়নি; বরং তাকে আসমানে তুলে নেয়া হয়েছে। সেখানে তিনি জীবিত আছেন। তিনি তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘কিতাবিদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যে ঈসার মৃত্যুর পূর্বে তার প্রতি ঈমান আনবে না এবং কেয়ামতের দিনে তিনি তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হবেন।’ (সুরা নিসা : ১৫৯)।

ঈসা (আ.)-এর অবতরণের পর (আহলে কিতাব) ইহুদি-খ্রিস্টান সবাই তার মৃত্যুর আগে তার প্রতি ঈমান আনবে। তাফসিরগ্রন্থগুলোতে বর্ণিত এ ব্যাখ্যাটিকে ইমাম ইবনে জারির তাবারি (রহ.) শুদ্ধতার বিচারে উত্তম বলেছেন। (তাফসিরে তাবারি : ৯/৩৮৬)। ইমাম ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, ইবনে জারির (রহ.) যা বলেছেন তাই সঠিক। কেননা পরবর্তী আয়াতগুলো দ্বারা তাই বুঝা যায়। (তাফসিরে ইবনে কাসির : ২/৪৫৪)।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 66 views
...